বিদেশ ডেস্ক ॥ ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘাত উদ্বেগের পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন পর্যন্ত ৩৫ ফিলিস্তিনি ও ৫ ইসরায়েলির মৃত্যু খবর দিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সংঘাত থামানোর ও বাংলাদেশসহ বেশিরভাগ মুসলিম দেশ ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এই ইস্যুতে চুপ রয়েছে সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা মুসলিম দেশগুলো। গত আগস্টে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও তারপর একে একে বাহরাইন, মরক্কো, সুদান কূটনৈতিক সম্পর্ক চালু করে। বিমান চলাচল শুরু হয়। প্রকল্প রূপায়ণ শুরু হয়। তখনই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান এবং ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনেই বলেছিলেন, মুসলিম দুনিয়ার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হলো। এখন ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কার্যত যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ওই দেশগুলি চুপ করে থাকাই শ্রেয় মনে করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ‘এই লড়াই হলো দমনের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই। ইসরায়েল ফিলিস্তিনকে পিছন থেকে ছুরি মারছে। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা কর্তব্য।’ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের মুখপাত্র বলেছেন, ‘ইসরায়েল সমানে আগ্রাসনের নীতি নিয়ে চলছে। বিশ্বের সব দেশ মিলে তাদের থামানো দরকার।’ আরব দেশগুলো যদি সমালোচনায় মুখর হয়, তা হলে আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো, সুদানের উপর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে চাপ বাড়বে। এমনিতেই ওই দেশের মানুষের একাংশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাই ওই সব দেশের প্রধানদের বলতে হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা সমাধানের জন্যই তারা ওই পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমিরাত ও ইসরায়েলের মধ্যে যখন চুক্তি হচ্ছে, তখন আবুধাবির যুবরাজ বলেছিলেন, ‘ফিলিস্তিনের এলাকায় ইসরায়েল আর আগ্রাসন করবে না’। জার্মানির সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কার্স্টেন মুলার বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। উত্তেজনা চলতে থাকলে তার প্রভাব আরব দেশগুলির মধ্যে পড়বে।’ তার মতে, ‘আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করাটা কৌশলগত পদক্ষেপ। এটা বন্ধ হবে না। তবে দুই দেশ মিলে যে সব প্রকল্পের রূপায়ণ করছিল, তা বন্ধ হতে পারে। আমিরাতকেও সতর্ক থাকতে হবে। আরব দুনিয়ার চাপ সহ্য করতে হবে। আরব দুনিয়া তাদের নীতি বদলাতে বাধ্য করবে, সেটা তারাও মানতে চাইবে না।’
Leave a Reply